থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে,-
কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘুর্ণিপাকে।
দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
ছুটছে তারা কেমন করে,
কিসের নেশায় কেমন করে মরছে যে বীর লাখে লাখে,
কিসের আশায় করছে তারা বরণ মরণ- যন্ত্রণারে।।
কেমন করে বীর ডুবুরী সিন্ধু সেঁচে মুক্তা আনে,
কেমন করে দুঃসাহসী চলছে উড়ে স্বর্গপানে।
জাপটে ধরে ঢেউয়ের ঝুঁটি
যুদ্ধ- জাহাজ চলছে ছুটি,
কেমন করে আনছে মানিক বোঝাই করে সিন্ধু-যানে,
কেমন জোরে টানলে সাগর উথলে ওঠে জোয়ার বানে।
কেমন করে মথলে পাথার লক্ষী ওঠেন পাতাল ফুঁড়ে,
কিসের অভিযানে মানুষ চলছে হিমালয় চুড়ে।
তুহিন মেরু পার হয়ে যায়
সন্ধানীরা কিসের আশায়;
হাউই চড়ে চায় যেতে কে চন্দ্রলোকের অচিন পুরেঃ
শুনবো আমি, ইঙ্গিতে কোন 'মঙ্গল' হতে আসছে উড়ে।।
কোন বেদনার টিকিট কেটে চন্ডু-খোর এ চীনের জাতি
এমন করে উদয়-বেলায় মরণ- খেলায় ওঠল মাতি।
আয়ার্ল্যান্ড আজ কেমন করে
স্বাধীন হতে চলছে ওরেঃ
তুরষ্ক ভাই কেমন করে কাঁটল শিকল রাতারাতি!
কেমন করে মাঝ গগনে নিভলো গ্রীসের সূর্য-বাতি।।
রইব না কো বদ্ধ খাঁচায়, দেখব এ-সব ভুবন ঘুরে-
আকাশ বাতাস চন্দ্র-তারায় সাগর-জলে পাহাড়-চুঁড়ে।
আমার সীমার বাঁধন টুটে
দশ দিকেতে পড়ব লুটেঃ
পাতাল ফেড়ে নামব নীচে, ওঠব আবার আকাশ ফুঁড়েঃ
বিশ্ব- জগৎ দেখব আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে।।
Sunday, 6 June 2010
Tuesday, 1 June 2010
চাঁদ হেরিছে চাঁদ মুখ তার
হুগলী, ফাঙ্গুন ১৩৩১
চাঁদ হেরিছে চাঁদ মুখ তার সরসীর আরশীতে।
ছুটে তরঙ্গ বাসনা- ভঙ্গ সে অঙ্গ পরশিতে।।
হেরিছে রজনী রজনী জাগিয়া
চকোর উতলা চাঁদের লাগিয়া,
কাহাঁ পিউ কাহাঁ ডাকিছে পাপিয়া
কুমুদীরে কাঁদাইতে।।
না জানি সজনী কত সে রজনী কেঁদেছে চকোরী পাপিয়া,
হেরেছে শশীরে সরসী- মুকুরে ভিরু ছায়া- তরু কাঁপিয়া।
কেঁদেছে আকাশে চাঁদের ঘরণী
চির বিরহিণী রোহিণী ভরণী,
অবশ আকাশ বিবশা ধরণী
কাঁদানিয়া চাঁদিনীতে।।
নজরুল রচনাবলী- ১ম খন্ড পৃষ্ঠা ১৯৮-১৯৯
চাঁদ হেরিছে চাঁদ মুখ তার সরসীর আরশীতে।
ছুটে তরঙ্গ বাসনা- ভঙ্গ সে অঙ্গ পরশিতে।।
হেরিছে রজনী রজনী জাগিয়া
চকোর উতলা চাঁদের লাগিয়া,
কাহাঁ পিউ কাহাঁ ডাকিছে পাপিয়া
কুমুদীরে কাঁদাইতে।।
না জানি সজনী কত সে রজনী কেঁদেছে চকোরী পাপিয়া,
হেরেছে শশীরে সরসী- মুকুরে ভিরু ছায়া- তরু কাঁপিয়া।
কেঁদেছে আকাশে চাঁদের ঘরণী
চির বিরহিণী রোহিণী ভরণী,
অবশ আকাশ বিবশা ধরণী
কাঁদানিয়া চাঁদিনীতে।।
নজরুল রচনাবলী- ১ম খন্ড পৃষ্ঠা ১৯৮-১৯৯
Subscribe to:
Posts (Atom)