যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে, অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে -

Friday, 14 October 2011

আমার গানের মালা আমি করবো কারে দান

আমার গানের মালা
আমি করব কারে দান
মালার ফুলে জড়িয়ে আছে
করুণ অভিমান
মালা করব কারে দান
চোখে মলিন কাজল রেখা
কন্ঠে কাঁদে কুহু কেকা
কপোলে যার অশ্রু রেখা
একা যাহার প্রান
শাঁখায় ছিল কাঁটার বেদন
মালায় শুচির জ্বালা
কন্ঠে দিতে সাহস না পাই
অভিশাপের মালা
বিরহে যার প্রেম- আরতি
আঁধার লোকের অরুন্ধতি
নাম না জানা সেই তপোতী
তার তরে এই গান
মালা করব তারে দান

যেদিন লব বিদায়

যেদিন লব বিদায় ধরা ছাড়ি পিয়ে
ধুয়ো লাশ আমার লাল পানি দিয়ে।
শরাবী জামসেদি গজল জানাজায় গাহিও আমার
দিবে গোর খুঁড়িয়া মাটি, খয়রাবি ওই শরাবখানায়।
রোজ কেয়ামতে তাজা উঠব জিয়ে।
এমনি পাব শরাব, ভেসে যাব তাহারি স্রোতে
উঠিবে খুশবু শরাবের আমার ওই গোরের পার হতে।
টলি পড়বে পথিক সে নেশায় ঝিমিয়ে।।

আমি চিরতরে দূরে চলে যাব

আমি চিরতরে দূরে চলে যাব,
তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।
আমি বাতাস হইয়া জড়াইব কেশে
বেণী যাবে যবে খুলিতে
তোমার সুরের নেশায় যখন
ঝিমাবে আকাশ কাঁদিবে পবন,
রোদন হইয়া আসিব তখন তোমার বক্ষে দুলিতে।।
আসিবে তোমার পরমোৎসবে কত প্রিয়জন কে জানে,
মনে প’ড়ে যাবে–কোন্‌ সে ভিখারী পায়নি ভিক্ষা এখানে।
তোমার কুঞ্জ-পথে যেতে, হায়!
চমকি’ থামিয়া যাবে বেদনায়
দেখিবে, কে যেন ম’রে মিশে আছে তোমার পথের ধূলিতে।


তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়

তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়
সেকি মোর অপরাধ?
চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিনী
বলে না তো কিছু চাঁদ
চেয়ে চেয়ে দেখি ফুটে যবে ফুল
ফুল বলে না তো সে আমার ভুল
মেঘ হেরী ঝুরে চাতকিনী
মেঘ করে না তো প্রতিবাদ
জানে সূর্যরে পাবেনা
 তবু অবুঝ সূর্যমুখী
চেয়ে চেয়ে দেখে তার দেবতারে
দেখিয়াই সে যে সুখি
হেরিতে তোমার রূপ-মনোহর
পেয়েছি এ আঁখি, ওগো সুন্দর
মিটিতে দাও হে প্রিয়তম মোর নয়নের
সেই সাধ


শাওনো রাতে যদি স্বরনে আসে মোরে

শাওনো রাতে যদি স্মরনে আসে মোরে
বাহিরে ঝড় বহে নয়নে বারি ঝরে
ভুলিও স্মৃতি মম নিশীথ স্বপ্ন সম
আঁচলের গাঁথা মালা ফেলিও পথ পরে
ঝরিবে পুবালী বায় গহন দুর বনে
রহিবে চাহি তুমি একেলা বাতায়নে
বিরহি কুহু কেকা, গাহিবে নীপ-শাখে
যমুনা নদী পারে, শুনিবে কে যেন ডাকে
বিজলী দ্বীপ- শিখা, খুঁজিবে তোমায় প্রিয়া
দু'হাতে ঢেকো আঁখি, যদি গো জলে ভরে

Tuesday, 11 October 2011

আমার যাবার সময় হল দাও বিদায়

আমার যাবার সময় হল দাও বিদায়
মোছ আঁখি দুয়ার খোল দাও বিদায়।।
ফোটে যে ফুল আঁধার রাতে
ঝরে ধুলায় ভোর বেলাতে।।
আমায় তারা ডাকে সাথী
আয়রে আয় 
সজল করুন আঁখি তোলো  দাও বিদায়
অন্ধকারে এসেছিলাম
থাকতে আঁধার যাই চলে
ক্ষনেক ভালবেসেছিলে চিরকালের নাই হলে
হল চেনা হল দেখা
নয়ন জলে রইল লেখা
দর বিরহী ডাকে কেকা বরষায়
ফাগুন স্বপন ভোলো ভোলো দাও বিদায়।।

মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী

মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী
দেব খোঁপায় তারার ফুল।
কর্ণে দোলাব তৃতীয়া তিথির,
চৈতী চাঁদের দুল।।
কন্ঠে তোমার পরাবো বালিকা,
হংস-সারির দুলানো মালিকা।
বিজলী জরীণ ফিতায় বাঁধিব,
মেঘ রঙ এলো চুল।।
জ্যোছনার সাথে চন্দন দিয়ে
মাখাব তোমার গায়,
রামধনু হতে লাল রঙ ছানি
আলতা পরাবো পায়।
আমার গানের সাত সুর দিয়া,
তোমার বাসর রচিব প্রিয়া।
তোমারে ঘেরিয়া গাহিবে আমার,
কবিতার বুলবুল।।

লাইলী তোমার এসেছে ফিরিয়া

লাইলী তোমার এসেছে ফিরিয়া মজনু গো আঁখি খোলো।
প্রিয়তম! এতদিনে বিরহের নিশি বুঝি ভোর হলো।।
মজনু! তোমার কাঁদন শুনিয়া মরু-নদী পর্বতে
বন্দিনী আজ ভেঙেছে পিঞ্জর বাহির হয়েছে পথে।
আজি দখিনা বাতাস বহে অনুকূল,
ফুটেছে গোলাপ নার্গিস ফুল,
ওগো বুলবুল, ফুটন্ত সেই গুলবাগিচায় দোলো।।
বনের হরিণ-হরিণী কাঁদিয়া পথ দেখায়েছে মোরে,
হুরী ও পরীরা ঝুরিয়া ঝুরিয়া চাঁদের প্রদীপ ধ’রে
পথ দেখায়েছে মোরে।
আমার নয়নে নয়ন রাখিয়া
কি বলিতে চাও, হে পরান-পিয়া!
নাম ধ’রে ডাকো ডাকো মোরে স্বামী
ভোলো অভিমান ভোলো।।

Sunday, 9 October 2011

খেলিছ এ বিশ্বলয়ে

খেলিছ এ বিশ্বলয়ে
বিরাট শিশুর আনমনে।
প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা 
নির্জনে প্রভু নির্জনে।।
শূণ্যে মহা আকাশে (তুমি) মগ্ন লীলা বিলাসে
ভাঙ্গিছ গড়িছ নীতি ক্ষণে ক্ষণে
নির্জনে প্রভু নির্জনে।।
তারকা রবি শশী খেলনা তব, হে উদাসী
পড়িয়া আছে রাঙা পায়ের কাছে রাশি রাশি।
নিত্য তুমি হে উদার
সুখে-দুখে অবিকার।
হাসিছ খেলিছ তুমি আপন সনে
নির্জনে প্রভু নির্জনে।।

(এটা টাইপ করার সময় আমার লিলি খালাম্মার কথা মনে উঠল। আমার খাতার মধ্যে উনি এই গানটা লিখে দিয়েছিল। ১৯৯৯ সনে। সেদিন প্রথম শুনলাম, গানটা উনার একটা প্রিয় গান। খাতাটা নেই, কিন্তু গানের পাতাটা রেখে দিয়েছি :) )