http://www.amardeshonline.com/pages/weekly_news/2012/05/27/7711
কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি বাংলা ভাষার সবচেয়ে দাপুটে কবিতা হিসেবে নিজের শীর্ষ আসনটি ধরে রেখেছে প্রায় একশ’ বছর ধরে। এ সুদীর্ঘ সময়ে এর সমপর্যায়ের বা কাছাকাছি আর কোনো কবিতা রচিত হয়নি। এ অসাধারণ কবিতাটি শুধু যে নজরুলের শ্রেষ্ঠতম কবিতা তাই নয়, কেউ কেউ এটিকে বাংলা ভাষারও শ্রেষ্ঠতম কবিতা বলে মনে করে থাকেন। কেউ কেউ বলেছেন, ‘বিদ্রোহী’ গোটা বিশ্বেরই একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা।
বাংলা ভাষার সর্বাধিক আলোচিত ও পঠিত সাড়াজাগানো এ কবিতাটি নজরুল রচনা করেন বিশের দশকের একেবারে গোড়ার দিকে, সৈনিক জীবন অবসানের পর। একটি বিব্রতকর বিষয় হচ্ছে এই যে, তাঁর আর কোনো কবিতার ক্ষেত্রে যা হয়নি, এ কবিতাটির ক্ষেত্রে সেটি হয়েছে, অর্থাত্ এ কবিতাটির প্রকাশকাল নিয়ে একটু জটিলতা রয়েছে। আগ্রহী পাঠক সহজেই জানতে পারেন, নজরুল এ কবিতাটি লিখেছিলেন ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে, বাংলা ১৩২৮ সনের পৌষ মাসের মাঝামাঝি নাগাদ। কিন্তু কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকার কার্তিক, ১৩২৮ সংখ্যায়। অন্যদিকে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৬ জানুয়ারি, বাংলা ১৩২৮ সালের ২২ পৌষ সংখ্যা সাপ্তাহিক ‘বিজলী’ পত্রিকায় এ কবিতাটি ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকায় প্রকাশের কথা উল্লেখ করে পুনর্মুদ্রণ করা হয়। পাঠকরা ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি প্রথম পাঠ করলেন ‘বিজলী’ পত্রিকায়। অথচ ইতিহাস বলে, এটি প্রথম ছাপতে হয়েছিল ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকায়। এর কারণ কী?
এ জটিলতা সৃষ্টির কারণ সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছেন মুজফ্ফর আহমদ। তিনি ছিলেন নজরুলের প্রথম যৌবনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। পরবর্তীকালে তিনি ভারতের শীর্ষস্থানীয় কম্যুনিস্ট নেতা কমরেড মুজফ্ফর আহমদে পরিণত হন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের মার্চে সৈনিক জীবনের অবসান হলে নজরুল কলকাতায় এসে তাঁর সঙ্গে বাস করতে থাকেন। মুজফ্ফর আহমদ তখন ছিলেন ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি’র সহকারী সম্পাদক। অন্যান্য কাজকর্মের সঙ্গে সঙ্গে তিনি সমিতির মুখপত্র ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’র বিভিন্ন দায়িত্বও পালন করতেন, যার মধ্যে লেখা সম্পাদনার কাজও ছিল। নজরুল এ পত্রিকার গ্রাহক ছিলেন। মাঝে মাঝে তিনি এ পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা সম্পর্কে মতামত লিখে পাঠাতেন। এভাবেই ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে মুজফ্ফর আহমদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। এ সম্পর্ক পরে বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। মুজফ্ফর আহমদ বয়সে নজরুলের চেয়ে দশ বছরের বড় হলেও সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হয়নি। বাঙালি পল্টন ভেঙে যাওয়ার পর তাঁর পরামর্শক্রমেই নজরুল কলকাতায় এসে ৩২, কলেজ স্ট্রিটে দু’জনে একই কক্ষে থাকতে শুরু করেন। পরে আরও কয়েকবার বাসা বদলের পর সর্বশেষ তাঁরা ৩/৪ সি তালতলা লেনের বাড়িতে এক কক্ষে থাকেন। এখানেই ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরের শেষ দিকের এক রাতে নজরুল রচনা করেন তাঁর সুবিখ্যাত ‘বিদ্রোহী’ কবিতা। এ বিষয়ে মুজফ্ফর আহমদ তাঁর ‘কাজী নজরুল ইসলাম : স্মৃতিকথা’ গ্রন্থে লিখেছেন :
“সে কবিতাটি লিখেছিল রাত্রিতে। রাত্রিতে কোন সময়ে তা আমি জানি নে। রাত দশটার পরে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলেম। সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে এসে আমি বসেছি, এমন সময়ে নজরুল বলল, সে একটি কবিতা লিখেছে। পুরো কবিতাটি সে তখন আমায় পড়ে শোনাল। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার আমিই প্রথম শ্রোতা।”
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি নজরুল লিখেছিলেন পেন্সিলে। উল্লেখ্য, সেকালে ফাউন্টেন পেন বা ঝরনা কলম ছিল না। দোয়াতের কালিতে বারবার কলম চুবিয়ে লিখতে হতো। তাঁর মাথার সঙ্গে কলম তাল মেলাতে পারবে না, এটা বুঝেই তিনি পেন্সিলে কবিতাটি লিখেছিলেন।এরপর ‘বিদ্রোহী’র প্রকাশকাল প্রসঙ্গ। কবিতাটি মাসিক ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রথম নিয়ে যান আফজাল-উল-হক। পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে বাবা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের (নদীয়া শান্তিপুরের কবি) নাম ছাপা হলেও সব কাজ আফজাল-উল-হকই সম্পন্ন করতেন। এর পরে সাপ্তাহিক ‘বিজলী’ পত্রিকার অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য এসে নজরুলের কাছে কবিতাটি শোনেন। তিনিও তাঁর পত্রিকার জন্য কবিতাটির একটি কপি করিয়ে নেন। এরপর ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৬ জানুয়ারি, ২২ পৌষ ১৩২৮ সাপ্তাহিক ‘বিজলী’তে ‘বিদ্রোহী’ প্রথম প্রকাশিত হয়। অন্যদিকে আফজাল-উল-হক যে ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রথম ‘বিদ্রোহী’ নিলেন, তখন পত্রিকার কার্তিক, ১৩২৮ সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল। এ সংখ্যাটি প্রকাশিত হয় আরও তিন মাস পর ফাল্গুন, ১৩২৮-এ। যেহেতু কার্তিক, ১৩২৮ সংখ্যার ‘মোসলেম ভারতে’ ‘বিদ্রোহী’ প্রকাশিত হলো, সে কারণে সময়ের বিচারে ‘মোসলেম ভারতে’ই ‘বিদ্রোহী’ প্রথম প্রকাশিত হয় বলে ধরা হয়।এ বিষয়ে মুজফ্ফর আহমদ লিখেছেন :
“সামান্য কিছু বেলা হতে ‘মোসলেম ভারতে’র আফজালুল হক সাহেব আমাদের বাড়িতে এলেন। নজরুল তাঁকেও কবিতাটি পড়ে শোনাল। তিনি তা শুনে খুব হইচই শুরু করে দিলেন। আর বললেন, ‘এখনই কপি করে দিন কবিতাটি, আমি সঙ্গে নিয়ে যাব।’ পরম ধৈর্যের সহিত কবিতাটি কপি করে নজরুল তা আফজাল সাহেবকে দিল। তিনি এই কপিটি নিয়ে চলে গেলেন। আফজালুল হক সাহেব চলে যাওয়ার পর আমিও বাইরে চলে যাই। তার পরে বাড়িতে ফিরে আসি ১২টার কিছু আগে। আসামাত্রই নজরুল আমায় জানাল যে, ‘অবিনাশদা (বারীন ঘোষদের বোমার মামলার সহবন্দী শ্রী অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য) এসেছিলেন। তিনি কবিতাটি শুনে বললেন, তুমি পাগল হয়েছ নজরুল, আফজালের কাগজ কখন বার হবে তার স্থিরতা নেই, কপি করে দাও, ‘বিজলী’তে ছেপে দিই আগে।’ তাঁকেও নজরুল... কবিতাটি কপি করে দিয়েছিল। ১৯২২ সালের ৬ই জানুয়ারি (মুতাবিক ২২ শে পৌষ, ১৩২৮ বঙ্গাব্দ) তারিখে, শুক্রবারে ‘বিদ্রোহী’ ‘বিজলী’তেই প্রথম ছাপা হয়েছিল।... অনেকে যে লিখেছেন ‘বিদ্রোহী’ ‘মোসলেম ভারতে’ ছাপা হয়েছিল সেটা ভুল। ‘বিদ্রোহী’ প্রথম ছাপানোর সম্মান সাপ্তাহিক ‘বিজলী’রই প্রাপ্য।”
প্রখ্যাত নজরুল গবেষক ও লেখক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম তাঁর ‘নজরুল জীবনী’ গ্রন্থে বিষয়টি আরো স্পষ্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন :
১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ৩/৪ সি, তালতলা লেনের (কলকাতা) বাড়ির নিচের তলার দক্ষিণ-পূর্ব কোণের ঘরটিতে বসে নজরুল একরাত্রে তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী’ রচনা করেন।... সকালবেলা ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকার আফজালুল হক সাহেব এলেন, কবিতাটি শুনে তিনি খুবই উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলেন এবং ‘মোসলেম ভারতের’ জন্য কবিতাটি তখনই কপি করিয়ে নিলেন। নজরুল কবিতাটি প্রথম ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকাতেই ছাপতে দিলেন। এরপর এলেন ‘বিজলী’ পত্রিকার শ্রী অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য। তিনি কবিতাটি শুনে ‘মোসলেম ভারত’ প্রকাশের অনিশ্চয়তা বিধায় ‘বিজলী’তে ‘বিদ্রোহী’ ছেপে দিতে চাইলেন। নজরুল যথারীতি ‘বিজলী’র জন্যেও ‘বিদ্রোহী’র সেই পেন্সিলে লেখা কপি থেকে আরেকটি কপি করে নিলেন। বস্তুতঃ ‘মোসলেম ভারতের’ প্রকাশ ইতিমধ্যেই অনিয়মিত হয়ে গিয়েছিল এবং ‘মোসলেম ভারতে’র আফজালুল হক ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি প্রকাশের জন্যে প্রথমে পেলেও সাপ্তাহিক ‘বিজলী’তেই কবিতাটি ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৬ই জানুয়ারি, মোতাবেক ২২শে পৌষ, ১৩২৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়।
অন্যদিকে আফজালুল হক সাহেব কার্তিক সংখ্যা ‘মোসলেম ভারতের’ জন্য পৌষ মাসে ‘বিদ্রোহী’ ছাপতে নিয়েছিলেন, আর সে সংখ্যাটি ফাল্গুন মাসের আগে প্রকাশিত হয়নি।
এখানে বলা দরকার, সাপ্তাহিক ‘বিজলী’তেই ‘বিদ্রোহী’ প্রথম প্রকাশিত হলেও যেহেতু নজরুল কবিতাটি প্রথমে ‘মোসলেম ভারত’-এর কার্তিক সংখ্যায় প্রকাশের জন্য আফজাল-উল-হককে দিয়েছিলেন, সে কারণে ‘মোসলেম ভারত’ কার্তিক সংখ্যায় প্রকাশের কথা উল্লেখ করেই ‘বিজলী’তে তা ছাপা হয়েছিল। ড. রফিকুল ইসলাম তাঁর পূর্বোক্ত গ্রন্থে লিখেছেন, ‘মোসলেম ভারতের’ কার্তিক সংখ্যার (ফাল্গুন মাসে প্রকাশিত) সমালোচনার ছলে ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি ‘বিজলী’তে পৌষ মাসে নিম্নোক্ত রূপে কৌশলে ছাপা হয় :
‘মোসলেম ভারত’ কার্তিক, ১৩২৮। সম্পাদক মোজাম্মেল হক। ‘মোসলেম ভারতে’র একটি বিশিষ্টতা এই যে, এতে বাজে জিনিস বড় একটা থাকে না। আমাদের বিশ্বাস, ভালো প্রবন্ধাদি সংগ্রহের জন্যই ‘মোসলেম ভারত’ ঠিক যথাসময়ে বের হয় না। এবারের ‘মোসলেম ভারতে’ শ্রীযুক্ত অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের ‘চুরাশি লাখ’ সুন্দর নিবন্ধ। মোহাম্মদ লুতফর রহমানের ‘রাজনৈতিক অপরাধী’ সুন্দর তেজঃপূর্ণ প্রবন্ধ।
‘কামাল পাশা’ হাবিলদার কাজি নজরুল ইসলামের কবিতা।... ‘বিদ্রোহী’ কাজি সাহেবের আরেকটি কবিতা। কবিতাটি এত সুন্দর হয়েছে যে আমাদের স্থানাভাব হলেও তা ‘বিজলী’র পাঠক-পাঠিকাদের উপহার দেবার লোভ আমরা সম্বরণ করতে পারলাম না। (সম্পাদক, ‘বিজলী’; ২২শে পৌষ, ১৩২৮)।
উল্লেখ্য, ‘বিদ্রোহী’ ছাপা হওয়ার পর ‘বিজলী’র ওই সংখ্যার সব কপি অতি দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। ফলে, পাঠকদের চাহিদা মেটাতে ওই সপ্তাহেই পত্রিকাটি আবার ছাপতে হয়। মুজফ্ফর আহমদ বলেন, ‘বিজলী’র ওই সংখ্যা দু’দফায় ২৯ হাজার কপি ছাপা হয়েছিল। তাঁর মতে, দেড় থেকে দু’ লাখের মতো লোক ওই সময় ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি পাঠ করেছিল। আজকার দিনে এটা ছিল এক অভূতপূর্ব ঘটনা।
কলকাতার পত্র-পত্রিকায় নজরুলের লেখা প্রকাশিত হতে থাকে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ, ১৩২৬ বঙ্গাব্দ থেকে। ওই বছর বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর মোট দশটি লেখা প্রকাশিত হয়। এগুলো ছিল গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ। এসব লেখার মধ্য দিয়ে তিনি অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। পরবর্তী বছর অর্থাত্ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল থেকে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর (বৈশাখ, ১৩২৭ থেকে অগ্রহায়ণ ১৩২৮) পর্যন্ত একের পর এক তাঁর সেরা কবিতাগুলো, যেমন—‘শাত-ইল-আরব’, ‘আগমনী’, ‘খেয়াপারের তরণী’, ‘কোরবানী’, ‘মোহররম’, ‘ফাতেহা-ই-দোয়াজদহম’, ‘আনোয়ার’, ‘ভাঙার গান’ প্রভৃতি প্রকাশিত হয়। এগুলো নজরুলের জন্য কবিস্বীকৃতি ও বিপুল প্রশংসা বয়ে আনে। কিন্তু ‘বিদ্রোহী’ কবিতার প্রকাশ সবকিছুকে যেন রাতারাতি পাল্টে দেয়। এটি কাব্যামোদী মহলে যেমন বিপুল চমকের সৃষ্টি করে, তেমনি আলোড়িত করে বাংলার তরুণ ও যুবসমাজকে। তিনি আখ্যায়িত হন ‘বিদ্রোহী কবি’ অভিধায়, যা পরবর্তীকালে তাঁর নামের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে।
যাহোক, কাগজ-কলমের হিসাবে ‘বিদ্রোহী’র প্রথম প্রকাশের সময় কার্তিক, ১৩২৮ হলেও বাস্তবে তার প্রথম প্রকাশ ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৬ জানুয়ারি। ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ৬ জানুয়ারি ‘বিদ্রোহী’র প্রকাশের নব্বই বছর পূর্তি হয়েছে। বলা বাহুল্য যে ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি পরে নজরুলের ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর, কার্তিক ১৩২৯ বঙ্গাব্দে গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে সাম্প্রতিককাল পর্যন্ত অসংখ্যবার পুনর্মুদ্রিত হয়েছে।
‘বিদ্রোহী’ কবিতা যেমন নজরুলকে আকাশচুম্বী খ্যাতি এনে দেয়, তেমনি বেশকিছু শত্রুও তৈরি করে। সৃষ্টি হয় নজরুলবিরোধী একটি গোষ্ঠী। প্রখ্যাত কবি-সমালোচক মোহিতলাল মজুমদার নজরুলের বিরোধিতা শুরু করেন। ‘শনিবারের চিঠি’ গোষ্ঠীর নেতৃত্বদানকারী সজনী কান্ত দাস ‘বিদ্রোহী’র প্যারোডি রচনা করেন। তবে সে ভিন্ন প্রসঙ্গ। হতথ্যসূত্র : কাজী নজরুল ইসলাম : স্মৃতিকথা—মুজফ্ফর আহমদ, মুক্তধারা, ১৯৭৩২, নজরুল জীবনী—ড. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৭২
No comments:
Post a Comment